মাদকদ্রব্য আমাদের সরীরের যে মারত্বক ক্ষতি করে জানলে ভুলেও মাদকদ্রব্য ছুবেন না

0

 



আমাদের দেশে সাধারণত তামাক , গাঁজা , ভাং , চরস , আফিম , মরফিন , কোকেন , মদ ইত্যাদি মাদকদ্রব্য হিসেবে পরিচিত । এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোকেন ও আফিম থেকে কৃত্রিম উপায়ে ঔষধ তৈরি করা হচ্ছে । এগুলোও নেশার উদ্রেক করে । যেমন : ঘুমের ঔষধ ।


 মানুষ কেন মাদকাসক্ত হয় তার বহুবিধ কারণ রয়েছে । তার মাঝে মাদকদ্রব্যের প্রতি কৌতূহল , বন্ধুবান্ধব এবং সঙ্গীদের প্রভাব , নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের আগ্রহ , সহজ আনন্দ লাভের চেষ্টা , পরিবারে মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা , পারিবারিক কলহ এবং অশান্তি , বেকারত্ব , হতাশা , অভাব অনটন , মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে অজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য । তবে সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে মাদকাসক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হলো স্বাভাবিক সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কের ঘাটতি । 


তামাক ব্যবহারে , জর্দা চিবিয়ে খেলে কিংবা ধূমপান করলে রক্তে নিকোটিনের মাত্রা বেড়ে যায় । নিকোটিন প্রাথমিকভাবে স্নায়ু কোষগুলোকে উদ্দীপিত করে , পরবর্তীতে দেহে নিকোটিনের চাহিদা আরও বেড়ে যায় । নিকোটিনের এই চাহিদা মেটাতে জর্দা ব্যবহার বা ধূমপানের নেশায় মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে । নিকোটিন গ্রহণে ধীরে ধীরে স্নায়ুকোষের কার্যকারিতা নষ্ট হতে থাকে । হাত , পা কিংবা মাথা অনৈচ্ছিকভাবে কাঁপতে থাকে । ফলে কোনো সূক্ষ্ম কাজ , যেমন সুইয়ের ছিদ্রে সুতা ঢোকানো , সোজা দাগ টানা , লেখালেখিতে ব্যর্থতাজনিত সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয় ।


মাদকদ্রব্য ব্যবহারে স্নায়ুতন্ত্রের উপর অনেক বড় প্রভাব পড়ে । মাদকাশক্তির কারণে একজন তার নিজস্ব | ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনে নেশাদ্রব্য গ্রহণে বাধ্য হয় । নেশা বস্তুর কারণে তার চিন্তাশক্তি ক্রমে লোপ পায় । মাদকদ্রব্য ব্যবহারকারীরা কাজে মনোযোগ হারায় , সাধারণ জীবনযাপনে ব্যর্থ হয় । অতিরিক্ত নেশায় | অচৈতন্য অবস্থায় কোনো স্থানে পড়েও থাকতে পারে । মাদকাসক্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পর পর মাদক গ্রহণ করতে না পারলে তার মারাত্মক কষ্ট হয় , এমনকি শরীরে অনিয়ন্ত্রিত খিঁচুনিও হতে পারে । এ জন্য মাদকের অর্থ জোগাড় করতে সেই ব্যক্তি অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে ।


 মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সাহায্যে মাদকের নেশা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব । তবে এ কাজে পরিবারের সবার সহানুভূতি ও সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি । 


মাদকাসক্তির কুফল


 মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মানসিক , শারীরিক , সামাজিক ও আর্থিক ক্ষতিসাধন হয় ।


 এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায়


পারিবারিকভাবে এবং সামাজিকভাবে স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের পরিবেশ বজায় রাখা ।


 নৈতিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রসার করা ।


 বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ।


 অসৎ বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা ও এর কুফল সম্পর্কে অবহিত করা । 


এ ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলা ও আইনের সঠিক প্রয়োগ করা ।


 মাদকাসক্তদের ঘৃণা বা অবহেলার চোখে না দেখে তাদেরকে সহানুভূতির সাথে ধৈর্য সহকারে সমাজে পুনর্বাসন বা প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা উচিত । প্রয়োজনে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের সহায়তা গ্রহণ করা অপরিহার্য । এ উদ্দেশ্যে 1990 সালে বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নামে একটি অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয় । দিন দিন এ অধিদপ্তরের কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে । এদের কার্যক্রমের মধ্যে মাদকদ্রব্য আইন প্রণয়ন , আইনের প্রয়োগ , নিরোধ , চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্য ।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)